Thursday, April 25, 2019

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকর্মী রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী


শেরেবাংলা নগরে কাভার্ড ভ্যানচাপায় বৃহস্পতিবার প্রাণ গেল নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকর্মী রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্যের (২১)| তাকে হারিয়ে স্তব্ধ পরিবার সহপাঠীরা। এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তারা।

এছাড়া এদিন দেশের ১০ স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কাঠবোঝাই গাড়ি টিনশেড ঘরে উঠে পড়লে মারা যান শ্রমিক।

নওগাঁর রানীনগরে ট্রাক্টরচাপায় স্কুলছাত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশাচাপায় মাদ্রাসাছাত্র, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মা-বাবার সামনে ট্রাকচাপায় ছেলে মারা যায়। রাঙ্গামাটিতে পুলিশের পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় বন কর্মচারী, টাঙ্গাইলের মধুপুরে অটোরিকশার চাপায় যাত্রী, মাদারীপুরের শিবচরে ট্রাকটরচাপায় শ্রমিক, পটুয়াখালীর দুমকিতে পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্যবসায়ী, চাঁদপুরের কচুয়ায় পিকআপের চাপায় হেলপার এবং চট্টগ্রামে অটোরিকশা উল্টে যুবক নিহত হয়েছেন।

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে ্যাব সদস্যসহ আহত হয়েছেন জন। যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার, ব্যুরো প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজধানী : ফাহমিদা হক লাবণ্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পুলিশ জানায়, লাবণ্য শ্যামলীর বাসা থেকে রাইড শেয়ারিং সেবা উবারের মোটরসাইকেলে মহাখালীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতালের সামনে এলে একটি দ্রুতগামী কাভার্ডভ্যান মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে বাম পাশে লাবণ্য আর ডানপাশে পরে যান চালক। সময় ওই যানটি লাবণ্যর ওপর দিয়ে চলে যায়। তাকে পথচারীরা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শেরেবাংলা নগর থানার এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, হৃদরোগ ইন্সটিটিউট থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বলা হয় দুর্ঘটনায় আহত দুজন তাদের হাসপাতালে এসেছে। পরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, লাল একটি কাভার্ড ভ্যান তাকে চাপা দেয়। শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি যুগান্তরকে বলেন, মোটরসাইকেলচালক সুমন হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পালিয়েছে। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। ছাত্রীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

একমাত্র মেয়ের মৃত্যুতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গের সামনে আহাজারি করছিলেন মা ফারজানা হক। প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুর সংবাদে হাসপাতালে ছুটে আসেন সহপাঠীরা। হাসপাতালে মর্গের সামনে বসে কাঁদছিলেন তারা। তামান্না নামের এক বান্ধবী বলেন, ক্যাম্পাসে প্রিয় বন্ধুদের একজন ছিল লাবণ্য। সে আমাদের মাঝে নেই, মানতে পারছি না।

পারিবারিক সূত্র জানা গেছে, বাবা ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক মা গৃহিণী ফারজানা হকের এক ছেলে এক মেয়ে। লাবণ্য ছিল ভাই-বোনের মধ্যে বড়। শ্যামলীর নম্বর রোডে ৩৩ নম্বর লিভিং শ্যামলী নামের বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার হরিপুর গ্রামে। ময়নাতদন্ত শেষে রাতে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই শ্যামলীতে জানাজা শেষে তার লাশ সাভারের তেঁতুলঝরা এলাকায় নানাবাড়িতে তাকে নেয়া হয়।

No comments:

Post a Comment